বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৬ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন মেয়র হারিছ গ্রেপ্তারের খবরে গৌরনদীতে সাধারন মানুষের উল্লাস ফাঁসির দাবিতে বিএনপির বিক্ষাভ মিছিল গৌরনদীতে এইচপিভি টিকা দান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন কাশিপুরের ড্রেজার ব্যবসায়ী সুমনের অপকর্মে কেউ খুন হলে দায় নেবে না বিএনপি
শ্রমবাজারের জট খুলছে আশা দেখছে বাংলাদেশ

শ্রমবাজারের জট খুলছে আশা দেখছে বাংলাদেশ

করোনার থাবায় বন্ধ হয়ে যায় পুরো বিশ্বের সব ধরনের কাজকর্ম। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের যোগাযোগ। ঘরবন্দি হয়ে যায় ৮০০ কোটি মানুষ। এ সময় বিশ্ব শ্রমবাজার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বড় ধরনের ধাক্কা লাগে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে। কাজ না থাকা, আকামা, ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াসহ নানা কারণে গত ৫ মাসে বিভিন্ন দেশে থেকে কাজ হারিয়ে দেশে ফেরত এসেছে ৯৫ হাজার ২৬ শ্রমিক। তবে করোনা সর্বাংশে নির্মূল না হলেও জীবনের প্রয়োজনে প্রায় সব দেশ স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরতে শুরু করেছে। উৎপাদনে ফিরেছে কলকারখানা। আগের অবস্থায় ফেরায় শ্রমবাজারও খুলে গেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ ২৫টি দেশের শ্রমিক সৌদি আরবে প্রবেশের অনুমোদন দিয়েছে সৌদি সিভিল এভিয়েশন জেনারেল অথরিটি। শিগগিরই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ অন্য দেশগুলোও প্রবেশের অনুমোদন দিবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, ফেরত আসা শ্রমিকদের নিজ নিজ কর্মস্থলে পাঠাতে শুরু থেকেই তৎপরতা চালাচ্ছে সরকার। এর বাইরেও চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে প্রবাসীকল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন দেশের মিশনগুলো যোগাযোগ রক্ষাসহ কোন দেশ কোন ধরনের জনশক্তির চাহিদা রয়েছে তা মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে শ্রমিকদের বহির্গমনের সময় যেন সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য ইমিগ্রেশন কাউন্টারে তাদের তথ্য সংগ্রহ

ও সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য দ্রুততম সময়ে ইমিগ্রেশন বিভাগের সিস্টেমে তথ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য অতিরিক্ত সচিবকে (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন অনুবিভাগ) আহ্বায়ক করে সুরক্ষা সেবা বিভাগের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

চলতি মাসের ২৯ তারিখ সৌদি ফ্লাইট চালু হবে। এরপরই শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তে যাবে সৌদি সরকার। অন্যদিকে মালয়েশিয়া সরকার যেসব শ্রমিক ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেখান থেকে ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশ।

জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রার) মহাসচিব শামিম আহমেদ চৌধুরী নোমান গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, আশা করছি সৌদি সরকার শ্রমবাজার খুলে দেবে এবং পর্যাপ্ত শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে নিবে। এছাড়াও মালয়েশিয়া সরকার তাদের সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসবে। পাশাপাশি শ্রমিক ফেরত না পাঠিয়ে তাদের নিজ নিজ কাজে বহাল রাখবে। তিনি বলেন, শ্রমবাজার নিয়ে আমরা আশার আলো দেখছি। আশা করছি করোনাপরবর্তী চাহিদা অনুযায়ী জনশক্তি পাঠাতে পারব। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে করোনা নিয়ন্ত্রণের ওপর। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা আবার স্বাভাবিক হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের স্বাস্থ্যবিধির ওপর কঠোরভাবে জোর দিতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।

এ দিকে বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা আবাসিক মিশনের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও উপদেষ্টা ড. জাহিদ হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় চালিকাশক্তি হচ্ছে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স। করোনার প্রভাবে সারাবিশ্বের শ্রমবাজার বিপর্যন্ত। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি কনস্ট্রাকশনের কাজ চালু হলে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বেও বিভিন্ন দেশে শ্রমিকদের ব্যাপক চাহিদা বাড়বে। এই চাহিদাকে কাজে লাগাতে হলে বাংলাদেশকে প্রস্তুত থাকতে হবে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি যে কাজের যে ধরনের শ্রমিক প্রয়োজন রয়েছে সে অনুযায়ী শ্রমিকদের দক্ষ করে তুলতে হবে। একই সঙ্গে তাদের চাহিদা অনুযায়ী স্বল্পসময়ের মধ্যে করোনা রিপোর্ট দিতে আলাদা ডেস্ক চালু রাখতে হবে। শ্রমিকরা সহজেই টেস্ট দিয়ে রিপোর্ট পেতে পারে এবং এতে স্বচ্ছতার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তা হলে শ্রমিকদের ফেরত আসতে হবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলমান বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংকটের কারণে বিশ্বের প্রায় সব দেশ বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। করোনার সংক্রমণ কমতে থাকলে বিভিন্ন দেশে সীমিত আকারে বিমান চলাচল শুরু করে। আটকে থাকা প্রবাসীরা সৌদি আরবে ফেরার সুযোগ পাচ্ছে। যে ২৫টি দেশের প্রবাসীরা সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশের নাম রয়েছে ১৮ নম্বরে।

অন্য দেশগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, বাহরাইন, লেবানন, কুয়েত, মিশর, তিউনিসিয়া, মরক্কো, চীন, ইংল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, গ্রিস, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, ইথোপিয়া, কেনিয়া ও নাইজেরিয়া। তবে বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলংকাসহ অন্য দেশগুলো আপাতত এ সুযোগ পাচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্তজুড়ে দিয়েছে সৌদি সরকার। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব ভ্রমণ করতে হলে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে একটি ফরম পূরণ করে তার মধ্যে বিস্তারিত তথ্য লিখে নিচে স্বাক্ষর এবং আসার সময় এয়ারপোর্টে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ডেস্কে জমা দিতে হবে।

ভ্রমণ করার সাত দিন আগে থেকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। মূলত পিসিআর দেওয়ার চার দিন আগে এবং পিসিআর রিপোর্ট পাওয়ার তিন দিন পর পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থাকতে হবে। সৌদি আরবের টাটামন এবং তাওয়াক্বালনা অ্যাপস ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে হবে। অবশ্যই আসার ৮ ঘণ্টার মধ্যে টাটামন অ্যাপের মাধ্যমে বাসার অবস্থান নির্ধারণ করতে হবে।

কোভিড-১৯ এর লক্ষণ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। যদি কোনো লক্ষণ দেখা দেয় তা হলে সরাসরি ৯৩৭ নম্বরে ফোন করতে অথবা সাধারণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

টাটামন অ্যাপসের মাধ্যমে প্রতিদিনের স্বাস্থ্যের অবস্থা জানাতে এবং কোয়ারেন্টিন থাকাকালীন সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত ফরম অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এ দিকে করোনা-উত্তর পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী জোগান দিতে সরকার দক্ষ কর্মী তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, দক্ষ কর্মী তৈরির লক্ষ্যে অধিকসংখ্যক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। শ্রম অভিবাসন সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে গুণগত শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশে গমনেচ্ছুদের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এ দিকে বিভিন্ন সংস্থা তৎপর হওয়ার কারণে গত ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশি শ্রমিক কোনো ধরনের জুট ঝামেলা ছাড়াই সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবেশ করেছে। কিছুদিন আগে প্রায় ৬৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক বিভিন্ন আইনি জটিলতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার ফেরত পাঠায়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আগামীতে বাংলাদেশি আর কোনো নাগরিক দুবাইয়ে গিয়ে হয়রানির শিকার হবেন না।

সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, আটকে পড়া শ্রমিকদের নির্বিঘেœ স্ব-স্ব দেশে কর্মস্থলে পাঠাতে গত বৃহস্পতিবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী ও কর্মসংস্থা মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা ছিলেন। নির্বিঘেœ শ্রমিক যেতে এসব দেশের রাষ্ট্রদূতরাও সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com